ভাড়া বাসা তৈরীর হিড়িক

সরকারি নীতিমালা উপেক্ষিত; উখিয়ায় ফসলি জমির শ্রেণী পরিবর্তনের মহোৎসব

বিশেষ প্রতিবেদক :

উখিয়ার মরিচ্যা লালব্রীজ থেকে পালংখালী রাস্তার দু-পাশ অন্তত ২ কি:মি: এলাকা জুড়ে ভাড়া বাসা তৈরির হিড়িক পড়েছে। জমির মালিকেরা অতি লোভের বশবর্তী হয়ে ৩ ফসলী জমির শ্রেনি পরিবর্তন পূর্বক বহুতল ভবন নির্মান করায় আগামী প্রজন্মে খাদ্য উৎপাদনে মারাত্বক প্রভাব পড়তে পারে এমনটাই মনে করছেন কৃর্ষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেনি পেশার অভিজ্ঞ লোকজন। তারা বলছেন, যেভাবে মানুষ বাড়ছে সে ভাবে জমি সম্প্রসারন হচ্ছে না। উপরোন্ত ফসলী জমি বিলুপ্ত করা হচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচূত্য রোহিঙ্গারা উখিয়ায় আশ্রয় নেয়ার পর থেক ভাড়া বাসার কদর বেড়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ফসলি জমির উপর যদি একান্ত স্থাপনা নির্মান করতে হয় তাহলে কালেক্টরের অনুমতি অত্যাবশ্যকীয়।

এ প্রসঙ্গে আলাপ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কৃষক জানালেন, তার নিজস্ব পৈত্রিক জম্পত্তির উপর স্থাপনা তৈরি করবে, সেখানে আবার অনুমতি কিসের। এভাবে প্রতিনিয়ত কৃর্ষি জমির শ্রেনি পরিবর্তন পূর্বক অসংখ্য বহুতল ভবন নির্মান করায় উখিয়ার সুনিদিষ্ট ফসলী জমি আশংকাজনকভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদী সচেতন মহল। তারা মনে করছেন, ফসলি জমি ভরাট হয় যাওয়ার কারনে গ্রামীন পরিবেশের উপর মারাত্বক বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে।

ফসলি জমির উপর ভাড়া বাসা তৈরি করে লাভবান হওয়া যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ নূর নামে একজন কৃষক জানালেন তার বসত ভিটা সংলগ্ন ৪০ শতক জমির উপর একটি ৪ ফ্লাটের দ্বিতল ভবন তৈরি করে মাসে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করছেন। অথচ একই জমিতে ধান চাষ করলে সর্বসাকুল্য ১২ হাজার টাকার ধান পাওয়া যাবে তাও আবার ৩/৪ মাস লাগবে। সরজমিন বেশ কয়েকটি নির্মানাধীন ভবন এলাকা ঘুরে দেখা যায় পাহাড় কাটাঁ মাটি দিয়ে ফসলি জমির ভরাট করে শ্রেনি পরিবর্তন করা হচ্ছে। জানতে চাওয়া হলে ঐ জমির মালিক জানালেন, পাহাড় কাটাঁ মাটি ক্রয় করে জমি ভরাট করা হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সালা উদ্দিন মেম্বার জানালেন, উখিয়ায় যতগুলি ফসলি জমি ভরাট করা হয়েছে সবুগলো মাটি পাহাড় কেঁটে সংগ্রহ করা হয়েছে। তা না হলে ফসলি জমির শ্রেনি পরিবর্তন করার কোন সুযোগ ছিল না। এ জন্য বন বিভাগকে দোষারারোপ করলেন ঐ ইউপি সদস্য।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মশিউর রহমান ফসলি জমির শ্রেনি পরিবর্তন বিষয়ে দুখ: প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হলে যারা ফসলি জমিতে ভবন নির্মান করেছে তাদের পস্তাতে হবে।

তিনি বলেন গত ২০ মাসে উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে প্রায় শতাধিক একরের মত তিন ফসলি জমির শ্রেনি পরিবর্তন করে ভাড়া বাসা তৈরি করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক উখিয়া হাই স্কুল চত্তরে অনুষ্ঠিত মাদক বিরোধী সমাবেশে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক দুঃখ করে বলেন, তিনি দেখেছেন রাস্তা দু পাশে নির্বিচারে ফসলি জমি ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মান করা হচ্ছে। তারা সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করছে। তাই এসব ভাড়া বাসা তৈরি কারকদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য ইউএনও কে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ইয়াবার টাকায় বহুতল ভবন নির্মান করা হচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখতে বলেন।